দেশের সার্বিক শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা, অবৈধ অনু- প্রবেশ প্রতিরোধ এবং সমাজে নৈতিক মূল্যবোধ রক্ষার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা দায়িত্বশীল ও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায়, শুক্রবার ( ২৪ অক্টোবর) দুপুর বারোটা ৫ মিঃ সময় বান্দরবান সেনাজোনের অধীনস্থ ২৮ ই বেঙ্গল রেজিমেন্টের রেইচা আর্মি ক্যাম্পের চেকপোস্টে নিয়মিত তল্লাশি ও নাগরিক যাচাইকালে এক রোহিঙ্গা নারী ও এক অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত পুরুষকে আটক করা হয়।
তল্লাশির সময় উভয় ব্যক্তি বৈধ কোনো জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদর্শনে ব্যর্থ হন, যা সেনা সদস্যদের সন্দেহ উদ্রেক করে। পরবর্তীতে তাদের কথাবার্তা অসংলগ্ন ও অসংগতিপূর্ণ বলে প্রতীয়মান হলে সেনা সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে গভীর জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। বিস্তারিত অনুসন্ধানে তারা জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (UNHCR)-এর একটি ভূয়া আইডি কার্ড প্রদর্শন করে নিজেদের প্রকৃত পরিচয় গোপনের চেষ্টা করে।
অতিরিক্ত অনুসন্ধান ও জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে একাধিকবার বান্দরবান এলাকায় আগমন করেছে এবং টাকার বিনিময়ে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত ছিল। আটককৃত পুরুষ ব্যক্তি স্বীকার করে যে, সে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করে উক্ত মহিলাকে বিভিন্ন হোটেলে পৌঁছে দিত। পরবর্তীতে উভয়ই অসামাজিক কার্যকলাপের বিষয়টি স্বীকার করে।
ঘটনার পর সেনা সদস্যরা দায়িত্বশীলভাবে উভয় ব্যক্তিকে আটক করে রেইচা আর্মি ক্যাম্পে হেফাজতে রাখেন। সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর ১৮২৫ ঘটিকায় বান্দরবান সদর থানার এসআই সৌরভের নেতৃত্বাধীন পুলিশের একটি দল আটককৃতদের আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করে থানায় নিয়ে যায়।
আটককৃতদের হলো ১।মোঃ ফাইসাল (২৮) পিতা-দিল মোহাম্মদ সাং-ছদাহা (চৌধুরী বাড়ি), ইউনিয়ন: ছদাহা, থানা-সাতকানিয়া, জেলা: চট্টগ্রাম। ২। রেহেনা আক্তার (১৯) পিতা- ইলিয়াস,সাং- পালংখালী, রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৬, শফিউল্লাহ ঘাটা ব্লক সি/৬,হেড মাঝি:তাহের সাব মাঝি: ইউনুস,উখিয়া।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দীর্ঘদিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ, মাদক ও অসামাজিক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রতিটি সেনা সদস্য দৃঢ় মনোবল, অটল দেশপ্রেম ও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব নিয়ে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। রেইচা আর্মি ক্যাম্পের এই সফল অভিযানও সেই ধারাবাহিকতা ও দায়িত্ববোধেরই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
সেনাবাহিনীর নিয়মিত টহল, তল্লাশি ও গোয়েন্দা তৎপরতা পার্বত্য অঞ্চলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দমনে ব্যাপক অবদান রাখছে। সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা, সমাজে নৈতিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা এবং দেশের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখতে সেনাবাহিনীর এ ধরনের অভিযান প্রশংসার দাবিদার।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শুধুমাত্র দেশের সীমান্ত সুরক্ষায় নয়, সমাজের নৈতিক অবক্ষয় রোধ, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ এবং শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখায়ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
রেইচা আর্মি ক্যাম্পের এই দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ সেনাবাহিনীর অদম্য দেশপ্রেম, নিষ্ঠা এবং জনগণের নিরাপত্তায় অবিচল অঙ্গীকারের প্রতিফলন।