নিজস্ব প্রতিবেদক
বান্দরবানে আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে রকি গ্রুপ। চাঁদা না দেওয়ায় পিটিয়ে হাত ভেঙে দিয়েছে এক গাড়ি চালকের। কুপিয়ে জখম করা হয়েছে দুই জনকে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) বিকালে এমন অভিযোগ করেন জেলার কাইচতলী এলাকার বাসিন্দা মো.বেলাল । তিনি নিজেও রকি গ্রুপের হামলায় আহত।
আহত অন্যনারা হলেন, বান্দরবান সুয়ালক ইউপির ২নম্বর ওয়ার্ড মধ্যম কাইচতলী এলাকার মো.রিদুয়ান(২৯)ও মো.রুবেল (২৬)।
আহত ব্যক্তিরা বলেন, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের রকি বড়ুয়া (২৫) মোঃ ফারুক(২২) শফিউল আলম(২৫) মোঃ পারভেজ (২২) মোঃ আমিন (২৫) বশর (২৫)সহ ২৩জন এই গ্রুপে আছেন। তাদের মধ্যে অনেকে এ হামলায় অংশ নেন।
এদিকে স্থানীয়রা জানান, পার্শ্ববর্তী বাজালিয়া এলাকার রকি বড়ুয়াদের একটি গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে সুয়ালক ইউনিয়নের
কাইচতলি,বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রান্তিক লেকসহ বিভিন্ন এলাকায় মাদক ব্যাবসা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি,চাঁদার টাকা না দিলে হামলা করে জখমের ঘটনা ঘটিয়ে চলছে। তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমে অতিষ্ঠ-সন্ত্রস্ত ও নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে এলাকাবাসী।
দাবি করা চাঁদা না দেয়ায় সর্বশেষ গত ১৮ নভেম্বর দুপুর দেড়টায় সদর উপজেলার মধ্যম কাইচতলি মতিনের বাড়ির সামনে রকি বড়ুয়ার নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ২০-২৫ জনের দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত একটি সঙ্ঘবদ্ধ দল বেলালের উপর হামলা চালিয়ে তার ডান হাতের হাঁড় ভেঙ্গে দেয়।এলাকাবাসী বেলালকে বাঁচাতে গেলে এসময় রিদুয়ান ও রুবেল নামে আরও দুই জনকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়।
এর আগে, বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নে মারধর, জখম, চুরি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অপরাধে গত ৮ এপ্রিল বান্দরবান সদর থানায় বিশ্বজিৎ দাশ নামে এক যুবক পেনাল কোড ১৮৬০ এর ১৪৩,৩২৩,৩৭৯,৫০৬ ধারায় রকি বড়ুয়ার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে রকিকে আটক করে আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে রকি জামিন প্রার্থনা করলে আদালত গত ১৮ মে তার জামিন মঞ্জুর করে । জামিনে বেরিয়ে পুনরায় সন্ত্রসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এই রকি বড়ুয়াদের গ্রুপটি। এলাকাবাসীর নিরাপত্তায় তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান স্থানীয়রা।
আহত মোঃ বেলাল জানান, নিজের একটি ডাম্পার (মিনি ট্রাক) গাড়ি চালান তিনি।গত বছর রকি বড়ুয়ার সন্ত্রাসী গ্রুপটি তাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ৫০ হাজার টাকা আদায় করেন।এবার ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করলে দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল দুপুরে গাড়ি নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সদর উপজেলার মধ্যম কাইচতলি মতিনের বাড়ি এলাকায় পৌছালে রকি বড়ুয়া, শহীদ, ফোরকানসহ ২০-২৫ জন সন্ত্রাসী গাড়ির গতি রোধ করে।মারধর শুরু করে।এতে তার বাঁ হাতের হাঁড় ভেঙে যায়।পরে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে রিদুয়ান ও রুবেল নামে দুইজনকে কুপিয়ে পালিয়ে যায় এই সন্ত্রাসী গ্রুপটি দল।
মো. রিদুয়ান জানান, দোকান থেকে চা খেয়ে বাড়ি ফেরার পথে কিছু লোক তার চাচা বেলালকে মারধর করতে দেখে রুবেল ও আরও কয়েকজন স্থানীয়দের সাথে ছুটে যান তিনি। এসময় তাকে পিঠে ও রুবেলকে হাতে চাপাতি দিয়ে কোপ দিয়ে পালিয়ে যায়।
কাইচতলি জামে মসজিদের ইমাম মো. তৈয়ুব জানান, গত ১৮ নভেম্বর ভোর সাড়ে ৫ টায় বাজালিয়া থেকে মসজিদে যাওয়ার পথে বান্দরবান প্রবেশ মূখে তার মটর বাইকের গতি রোধ করার চেষ্টা চালায় রকি ও তার সন্ত্রসী দলের অন্য সদস্যরা। এনিয়ে তিনি সাতকানিয়া থানায় রকিদের বিরুদ্ধে একটি সাধারন ডায়েরি করেছেন।
বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.মাসুদ পারভেজ জানান, হামলায় আহত বেলাল লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন । যা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান তিনি।