নিজস্ব প্রতিবেদক
শান্তি , সম্প্রীতি ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে বান্দরবানের রোয়াংছড়ি ও বিলাইছড়ি উপজেলা সীমান্তবর্তী দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় প্রাক বিদ্যালয় চালুকরন এবং শিক্ষকদের বেতন দিয়েছেন বান্দরবান সেনা জোন কমান্ডার লেঃ কর্নেল এ এস এম মাহামুদুল হাসান পিএসসি!
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারী) দুপুর ১টার সময় বান্দরবান সেনা জোন কমান্ডার রেজিমেন্টের দায়িত্বপূর্ণ দুর্গম পাহাড় রোয়াংছড়ি ও বিলাইছড়ি উপজেলা চুয়ানবিল বম পাড়ায় ২৬ টি পরিবারের জন্য প্রাক বিদ্যালয় চালুকরণ, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপকরণ ও শিক্ষকদের বেতন প্রদান করেন!
ভিক্টরী টাইগার্স এর অধিনায়ক ও বান্দরবান সেনা জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল এ এস এম মাহাদুল হাসান পিএসসি, রোয়াংছড়ি উপজেলার ক্যাম্প কমান্ডার মেজর আনিস উপস্থিত হয়ে প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সকলের সাথে কুশলাদি বিনিময় ও উক্ত প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয় চালুকরণ ও শিক্ষক, শিক্ষিকার বেতন দেয় । এ সময় সামরিক বেসামরিক বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বান্দরবান সেনা জোনের জোন কমান্ডার লে: কর্নেল এস এম মাহমুদুল হাসান পিএসসি বলেন, আজ আমরা এক গৌরবময় উদ্যোগের সাক্ষী হতে এখানে একত্রিত হয়েছি। বান্দরবানের রোয়াংছড়ি ও বিলাইছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় চালুকরণ একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এটি শুধু শিক্ষা বিস্তারের জন্য নয়, শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়নের ধারাকে আরও সুসংহত করার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আমরা সবাই জানি, শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার। কিন্তু দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলের শিশুরা নানা প্রতিকূলতার কারণে সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। আজকের এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা তাদের শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে একধাপ এগিয়ে গেলাম। আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই শিক্ষকদের, যারা নিজেদের পরিশ্রম ও নিষ্ঠার মাধ্যমে এই বিদ্যালয়গুলোর পরিচালনা নিশ্চিত করবেন। তাদের সম্মানী বা বেতন নিশ্চিত করে আমরা কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের প্রতি।
সেনাবাহিনী সবসময় জনগণের পাশে থেকে কাজ করে আসছে, ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে। আমাদের লক্ষ্য শুধু নিরাপত্তা রক্ষা নয়, জনগণের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা। এই বিদ্যালয়গুলোর মাধ্যমে শিশুরা শিক্ষিত হয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়বে, যা একদিন এই অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
পরিশেষে, আমি এই মহতী উদ্যোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই এবং প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর সফলতা কামনা করি। এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের মানবিক ও জনহিতকর কার্যক্রম সেনাবাহিনী চলমান রাখবে।
শিক্ষা উপকরণ ও অনুদান পেয়ে পাড়াবাসী সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন এবং বলেন, চুয়ানবিল বম পাড়া প্রায় ১০০ বছর পরে নতুনভাবে শিক্ষার আলো খুঁজে পেয়েছি! আমরা শিক্ষার জন্য এই দুর্গম পাহাড় থেকে রোয়াংছড়ি উপজেলার কমপক্ষে ৭ কিলোমিটার পাহাড়ি রাস্তা হাটার পথ পেরিয়ে বিদ্যালয় যেতে হয়। তাছাড়া আমাদের ছেলে মেয়েরা শিক্ষার দিক থেকে বঞ্চিত ছিলো। সেনাবাহিনী আমাদের যে সেবা ও সহযোগীতা করছে তা সত্যি প্রশংসার দাবিদার। আমরা বম সম্প্রদায় সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। নতুন প্রতিষ্ঠিত এই প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয় আমাদের সন্তান ও ভবিষ্যতের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ বলেও তারা অভিহিত করেন।